লোশন ব্যবহার করে নামাজ পড়া যাবে?

সংগৃহীত ছবি
ধর্ম ডেস্ক :শীতকালে ত্বকে দেখা দেয় রুক্ষতা ও শুষ্কতা। শীতে ত্বকের রুক্ষতা, শুষ্কতা রোধে অনেকেই লোশন ও বিভিন্ন ক্রিম ব্যবহার করেন। এই ক্রিম-লোশন ব্যবহার করে নামাজের বিধান কী?

ফেকাহবিদদের মতে, ক্রিম-লোশনে যদি অপবিত্র কিছু মেশানো না হয় অর্থাৎ, এতে হারাম কোনো পদার্থ মেশানোর দলিল পাওয়ার আগ পর্যন্ত তা ব্যবহার করা বৈধ। কারণ, কোনো জিনিসে হারাম কিছুর মিশ্রণ না থাকা সেই বস্তু ব্যবহারের বৈধতা প্রমাণ করে। আলেমদের মতে, লোশন, স্নো, ক্রিম ইত্যাদিতে নাপাক বস্তু মিশানোর মতো কিছু এখন পর্যন্ত প্রমাণিত হয়নি। সুতরাং এসব ব্যবহার করার পর নামাজ আদায় করা যাবে।

তেল-লোশন লাগানোর পর অজু করলে হবে কি?

শরীরে লোশন, ক্রিম, গ্লিসারিন বা তেল দিলে তা শরীরের চামড়ার সঙ্গে মিশে যাওয়ার কারণে আবরণ থাকে কিনা— বোঝা যায় না। ফলে অজু করার সময় হাতে পানি নিয়ে কনুই পর্যন্ত হাত-পা ভালো করে ঘষে নিলেই হবে? এতে নিঃসন্দেহ হয় যে, লোমকুপের গোঁড়ায় পানি পৌঁছেছে, নাকি সাবান দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে?

এই প্রশ্নের উত্তর হলো- অজুর ক্ষেত্রে অজুর অঙ্গগুলো এবং ফরজ গোসলের ক্ষেত্রে পুরো শরীর পরিপূর্ণভাবে পানি দিয়ে ভেজানো আবশ্যক। ফলে যদি কোনো অংশ না ভিজে— তাহলে অজু, গোসল ও পবিত্রতা হবে না।

আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত বর্ণিত হাদিসে আছে, ‘কোনো এক সফরে আল্লাহর রাসুল (সা.) আমাদের পেছনে পড়ে গেলেন। পরে তিনি আমাদের কাছে পৌঁছলেন। এদিকে আমরা (আসরের) নামাজ আদায় করতে বিলম্ব করে ফেলেছিলাম। তাই (তা আদায় করার জন্য) আমরা অজু করা শুরু করলাম। এ সময় আমরা আমাদের পা কোনোমতে পানি দ্বারা ভিজিয়ে নিচ্ছিলাম। তখন তিনি উচ্চৈঃস্বরে বলেন, ‘সর্বনাশ! গোড়ালির নিম্নাংশগুলোর জন্য জাহান্নামের আগুন রয়েছে।’ তিনি দুই বা তিনবার এ কথা বললেন। (বুখারি, হাদিস : ৯৬; মুসলিম, হাদিস : ২৪১)

অজুর ক্ষেত্রে শরিয়তের বিধান হলো- যদি হাতের ভেতর কোনো এমন জিনিস লেগে যায়— যেটা চামড়া পর্যন্ত পানি পৌছার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে; আর এটার কারণে যদি আসলেই শরীরে পানি না পৌঁছে, এমনটি হয়ে থাকলে অজু ও গোসল হবে না। সেই অজু বা গোসল দিয়ে নামাজ আদায় করে থাকলে— ওই নামাজগুলো আবার পড়ে নিতে হবে।

আবু তামিম জায়শানি (রহ.) থেকে বর্ণিত আছে, আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) যখন অজু করতেন— আংটি নাড়াচাড়া করতেন। আবু তামিমও তা করতেন। ইবনে হুবায়রাও তা করতেন।

সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত অবস্থায় অজু করার সময় হাতে পানি নিয়ে কনুই পর্যন্ত হাত, পা তথা অজুর যেই অঙ্গগুলোতে গ্লিসারিন ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়েছে, সেই অঙ্গগুলো ভালো করে ঘষে নিলেই হবে। সাবান দিয়ে ধোয়ার প্রয়োজন নেই।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» হাদির হামলাকারীরা ভারতে পালিয়েছে এমন কোনো তথ্য নেই: ডিএমপি

» আইপিএল নিলামে বড় তারকাদের আড়ালে যাদের দিকে তাকিয়ে দলগুলো

» আখেরি মোনাজাতের মধ্যেদিয়ে শেষ হলো ইজতেমা

» জার্মানিতে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠান

» সুদানে হতাহত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের পরিচয়সহ সর্বশেষ তথ্য জানাল আইএসপিআর

» প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভে উত্তাল হাঙ্গেরি

» হাদিকে হত্যাচেষ্টার মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্টরা মাথাচাড়া দিতে চাচ্ছে: মির্জা ফখরুল

» নারায়ণগঞ্জে লঞ্চের ধাক্কায় বাল্কহেড ডুবি

» রেজওয়ানের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত দুইজন গ্রেফতার

» শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস: শোকের ঊর্ধ্বে এক সংকল্প

 

সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,

ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,

নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন: ই-মেইল : [email protected],

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

লোশন ব্যবহার করে নামাজ পড়া যাবে?

সংগৃহীত ছবি
ধর্ম ডেস্ক :শীতকালে ত্বকে দেখা দেয় রুক্ষতা ও শুষ্কতা। শীতে ত্বকের রুক্ষতা, শুষ্কতা রোধে অনেকেই লোশন ও বিভিন্ন ক্রিম ব্যবহার করেন। এই ক্রিম-লোশন ব্যবহার করে নামাজের বিধান কী?

ফেকাহবিদদের মতে, ক্রিম-লোশনে যদি অপবিত্র কিছু মেশানো না হয় অর্থাৎ, এতে হারাম কোনো পদার্থ মেশানোর দলিল পাওয়ার আগ পর্যন্ত তা ব্যবহার করা বৈধ। কারণ, কোনো জিনিসে হারাম কিছুর মিশ্রণ না থাকা সেই বস্তু ব্যবহারের বৈধতা প্রমাণ করে। আলেমদের মতে, লোশন, স্নো, ক্রিম ইত্যাদিতে নাপাক বস্তু মিশানোর মতো কিছু এখন পর্যন্ত প্রমাণিত হয়নি। সুতরাং এসব ব্যবহার করার পর নামাজ আদায় করা যাবে।

তেল-লোশন লাগানোর পর অজু করলে হবে কি?

শরীরে লোশন, ক্রিম, গ্লিসারিন বা তেল দিলে তা শরীরের চামড়ার সঙ্গে মিশে যাওয়ার কারণে আবরণ থাকে কিনা— বোঝা যায় না। ফলে অজু করার সময় হাতে পানি নিয়ে কনুই পর্যন্ত হাত-পা ভালো করে ঘষে নিলেই হবে? এতে নিঃসন্দেহ হয় যে, লোমকুপের গোঁড়ায় পানি পৌঁছেছে, নাকি সাবান দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে?

এই প্রশ্নের উত্তর হলো- অজুর ক্ষেত্রে অজুর অঙ্গগুলো এবং ফরজ গোসলের ক্ষেত্রে পুরো শরীর পরিপূর্ণভাবে পানি দিয়ে ভেজানো আবশ্যক। ফলে যদি কোনো অংশ না ভিজে— তাহলে অজু, গোসল ও পবিত্রতা হবে না।

আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত বর্ণিত হাদিসে আছে, ‘কোনো এক সফরে আল্লাহর রাসুল (সা.) আমাদের পেছনে পড়ে গেলেন। পরে তিনি আমাদের কাছে পৌঁছলেন। এদিকে আমরা (আসরের) নামাজ আদায় করতে বিলম্ব করে ফেলেছিলাম। তাই (তা আদায় করার জন্য) আমরা অজু করা শুরু করলাম। এ সময় আমরা আমাদের পা কোনোমতে পানি দ্বারা ভিজিয়ে নিচ্ছিলাম। তখন তিনি উচ্চৈঃস্বরে বলেন, ‘সর্বনাশ! গোড়ালির নিম্নাংশগুলোর জন্য জাহান্নামের আগুন রয়েছে।’ তিনি দুই বা তিনবার এ কথা বললেন। (বুখারি, হাদিস : ৯৬; মুসলিম, হাদিস : ২৪১)

অজুর ক্ষেত্রে শরিয়তের বিধান হলো- যদি হাতের ভেতর কোনো এমন জিনিস লেগে যায়— যেটা চামড়া পর্যন্ত পানি পৌছার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে; আর এটার কারণে যদি আসলেই শরীরে পানি না পৌঁছে, এমনটি হয়ে থাকলে অজু ও গোসল হবে না। সেই অজু বা গোসল দিয়ে নামাজ আদায় করে থাকলে— ওই নামাজগুলো আবার পড়ে নিতে হবে।

আবু তামিম জায়শানি (রহ.) থেকে বর্ণিত আছে, আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) যখন অজু করতেন— আংটি নাড়াচাড়া করতেন। আবু তামিমও তা করতেন। ইবনে হুবায়রাও তা করতেন।

সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত অবস্থায় অজু করার সময় হাতে পানি নিয়ে কনুই পর্যন্ত হাত, পা তথা অজুর যেই অঙ্গগুলোতে গ্লিসারিন ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়েছে, সেই অঙ্গগুলো ভালো করে ঘষে নিলেই হবে। সাবান দিয়ে ধোয়ার প্রয়োজন নেই।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



 

সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,

ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,

নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন: ই-মেইল : [email protected],

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com